প্রথমবার সিলেট ওয়ার্ডক্যাম্প ভ্রমণ
March 15, 2024 by Shahriar Ahmed Shovon
গত শুক্রবার সকালে গেছি সিলেট, WordCamp এর জন্য। সকালে ট্রেনের জন্য আগেভাগে ভেবে প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে গিয়ে বসে আছি। এরপরে আবার ট্রেন লেট ১ ঘণ্টা মতো। সব মিলিয়ে ভালোই লেট। এর মধ্যে টিকেট কেটে গেছি জানালার পাশে কিন্তু গিয়ে দেখি সিট উল্টো। মূলত বগি বদলেছে তাই সোয়াপ হয়ে গেছে সিট। আর যে টাইপের টিকেট কেটেছি সিট দিয়েছে ভিন্ন। বেশি টাকা দিয়ে টিকেট কেটে কি লাভ হলো সেটা বুঝলাম না। খুব বেশি মেজাজ খারাপ হয়েছে। বিরক্তি নিয়ে বসে থেকে দেখি উপরের ফ্যানটাও চলেনা। গরম, বিরক্তি সব মিলিয়ে খুব বাজে অবস্থা। এমন যেতে যেতে শেষের দিকে গিয়ে কিছু সিট ফাঁকা হওয়ায় উঠে গিয়ে বসেছি এক জানালার পাশে।
শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন থেকে কুলাউড়া রেল স্টেশন অবধি যে পাহাড়, গাছ, বন আমি মনে হয় ঐ অংশের জার্নি ১০০ বার করলেও ক্লান্ত হবোনা। সন্ধ্যার দিকে হচ্ছিল অল্প অল্প বৃষ্টি। আমি ট্রেনের বগির মাঝের ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে শরীর ট্রেনের বাইরে দিয়ে বাতাস, বৃষ্টি সব কিছুর স্বাদ নিয়েছি। এত্তো জোস টাইম আর পরিবেশ! আলহামদুলিল্লাহ।
এরপরে সিলেটে পৌঁছে উৎসবের থেকে ডিরেকশন নিয়ে গেছি মেডিকেল হাসপাতালের সামনে। উৎসব অফার করেছিল ওর ফ্রেন্ডের সঙ্গে মেসে থাকতে কিন্তু কম্ফোর্ট ফিল করিনা দেখা একটা মোটামুটি টাইপের হোটেলে উঠেছি। মোটামুটি থাকা যায় টাইপ রুম আরকি। মাত্র ৫-৬ ঘণ্টার জন্য বেশি টাকা দিয়ে ভালো কোথাও যেতে ইচ্ছে করেনি। হোটেল ম্যানেজারের ব্যবহার একটুও ভাল্লাগেনাই। তবুও কষ্ট করে থাকছিই বলা যায়, মানে পছন্দ না হলে এমনই লাগে।
রাতে আশেপাশে একটু ঘুরে দেখেছি। খুব বেশি কোথাও যাওয়া হয়নি। সুরমা নদী-আলী আমজাদের ঘড়ি আর শহরের মধ্যে বিক্ষিপ্ত হাঁটাহাঁটি, এই হচ্ছে ঘুরে দেখা। রাত ১১-১১:৩০ টার আশেপাশে হোটেলে ফিরেছি।
সকালে ঘুম থেকে উঠতে হইছে লেট। ওয়ার্ডক্যাম্প রেজিস্ট্রেশন ৭ টা থেকে আমি উঠছি ৬:৩০ এর দিকে। উঠে রেডি হয়ে নিচে গিয়ে বৃষ্টি হয়। সিলেটের জন্য মোটেও আনেক্সপেক্টেড কিছুনা। ঝামেলা হচ্ছে চাবি দেয়ার জন্য ঐ ব্যাটা ম্যানেজারকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। লেট হচ্ছিল পরে পাশের এক দোকানে দিয়ে চলে আসছি।
সাস্ট বেশ সুন্দর। বিশেষ করে পায়ে হাঁটার রাস্তা খুব সুন্দর। পরিবেশটাও বেশ, সবুজ। গিয়ে দেখি বৃষ্টির কারণে অনেক লেট। ৪০-৪৫ মিনিট ওয়েট করে এরপরে শুরু হলো ফাইনালি।
যতটা এক্সপেক্ট করেছি ততটা ভালো হয়নি। অন্তত লাস্ট ইয়ারের যেমন গল্প শুনেছিলাম তেমন তো কোনোভাবেই হয়নি। স্টলে স্টলে ঘুরে স্টিকার, টি-শার্ট নিয়েছি। সব স্টলে গেম টাইপ দিয়েছে কিছু পাওয়ার জন্য। গেমে সমস্যা না, সমস্যা ওদের সঙ্গে ছবি তুলে ট্যাগ করে পোস্ট করতে বলায়। আমি আবার ঢং করে খুব কুল সেজে, “ভাইয়া ফেসবুক তো নাই। x এ শেয়ার করি?” :3 এরপরেও টিশার্ট নিয়েছি কয়েকটা। আর সঙ্গে স্টিকার বেশ অনেক গুলো। ভালো স্টিকার কম ছিল যদিও, বেশিরভাগই মিম টাইপ।
স্পিচের মধ্যে একটা ছিল মোহাম্মদ ইমরান হাসান ভাইয়ের অপ্টিমাইজড SQL নিয়ে, আরেকটা ছিল ওয়াহিদ বিন আহসান ভাইয়ের UX নিয়ে। এই দুটো টক খুব ইঞ্জয় করেছি। বাকিগুলো তেমন ভালো লাগেনি। ওয়েল ভালো লাগেনি বলতে আমি তো ওয়ার্ডপ্রেসের সঙ্গে ওভাবে কানেক্টেড না এজন্য রিলেট করতে পেরেছি কম। ঐ দুইটা টক জেনারালাইজ হওয়াতে মূলত ভালো লেগেছে।
ফেয়ার ট্রেনের টিকেট ছিলনা, বাস রাত হলে ঝামেলা হবে ভেবে প্রোগ্রাম শেষ না করেই রওনা দেই বাসের উদ্দেশ্যে। আর তাছাড়া পরেরদিন ল্যাব ফাইনাল ছিল ফিজিক্সের।
আমার জেলা কুষ্টিয়ার স্থানীয় ভাষা প্রচলিত প্রমিত বাংলার চাইতে অনেক বেশি আলাদা না। যার ফলে কখনো ভাষাগত সমস্যায় পড়তে হয়নি। তবে সিলেট যাওয়ার পরে মনে হয়েছে স্থানীয় একটা ভাষা থাকা বেশ মজার। সিএনজি চালক আমার সঙ্গে কথা বলছে একদম ঠিকঠাক, সব বুঝছি। আবার পাশে ফিরেই স্থানীয় ভাষায় কথা বলছে স্থানীয় লোকের সাথে যার খুব সামান্যই বুঝতে পারছিলাম। আমাকে কিডন্যাপ করার প্ল্যান যদি আমাকে শুনিয়েও করে, আমি বুঝতে পারবো না। তবে শোচনীয় অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে ওধরনের সমস্যা হয়নি। খুশি হবো নাকি দুঃখিত হবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা।
বাসের জন্য সিলেটের বন্দর নামের এলাকাতে গেছি। এন্ড যাওয়ার ডিরেকশন যতজনের থেকে নিয়েছি সবাই, “ভাই বন্দরে মোবাইল-মানিব্যাগ সাবধান।” :3 তবে শেষ অবধি ঝামেলা হয়নি। বাস পেয়ে গেছি সঙ্গে সঙ্গে, ওয়েট করতে হয়নি। বাস ভালো ছিল কিন্তু স্লো আসছে মনে হলো। বাসে পাশের যাত্রী খুব ইন্টারেস্টিং। আমি সাধারণত আলাপ, গল্প পছন্দ করিনা অপরিচিত হলে। তবে উনি যেচে গল্প শুরু করলেন আর উনার বিজনেস নিয়ে গল্প করছিলেন। খুব ইউনিক একটা বিজনেস আর উনার এচিভমেন্ট, স্ট্রাটেজি সব মিলিয়ে গল্প শুনতে খারাপ লাগেনি। হলে পৌঁছেছি এসে ১:৩০’র দিকে। কিছুক্ষণ কম্পিউটার চালিয়ে ঘুম দিয়েছি।
দেরিতে ঘুমানোয় আর টায়ার্ড থাকায় দেরিতে উঠেছি। উঠে দেখি ল্যাব ফাইনালের সময় বাকি ১২ মিনিট। দ্রুত রেডি হয়ে গিয়েছি বেশ লেটে। প্রায় ২৫ মিনিট লেট হয়েছে যতদূর মনে পড়ে। কোনো প্রিপারেশন না থাকায় থিওরি পার্ট কিছুই লিখতে পারিনি। সব মিলিয়ে খুবই বাজে এক্সাম। ডেটা টেবিল, এক্সপেরিমেন্ট ধরে হয়তো ৪০ এ ২০ পাওয়া যাবে।
এন্ড এভাবেই শেষ হলো ১১ তারিখ এবং কার্সড ১২ তারিখ।
Categories
Recent Posts
About
This is my personal blog, where I write about various topics related to software development, technology, and my own experiences. I enjoy exploring new technologies, frameworks, and programming languages, and sharing what I learn with others.